মেয়েটাকে আমি অনেক ভালোবাসি

ফোনটা রিসিভ করেই বুঝতে পারলাম ও কাঁদছে। – প্লিজ লক্ষ্ণীটি কাঁদে না। বাবুনি আমার। সরি→!!
: হয়েছে থাক। তোমার আর আসতে হবে না।আমি তোমার কে! – প্লিজ এভাবে বলে না। রাস্তায় খুব জ্যাম। কথাটা শোনার আগেই দিপ্তী ফোনটা রেখে দিল।
"এই লক্ষ্ণী মেয়েটা আর কেউ না সে আমার দিপ্তী। আমি ওকে বাবুনি বলে ডাকি।আজ ছয় মাস হল আমাদের রিলেশনশিপ। আমাদের প্রথম রিলেশনশিপের ছয় মাস আজ। কিন্তু ওকে আজ সারাটা দিন সময় দিতে পারিনি। ব্যাংকার হওয়ার এই এক জ্বালা।
ফ্যামিলিকে টাইম দেওয়া যায় না। ব্যাংকার দের কি কোন পার্সোনাল লাইফ বলে কিছু নেই!! ধ্যাৎ!! ছুটি থাকার পরও জরুরী কারনে শত অনিচ্ছা সত্বেও ডিউটিতে আসতে হয়েছিল। আর এখন জ্যাম এর কারনে রাস্তায় বাড়তি সময় নষ্ট করতে হচ্ছে। সাড়ে নয়টা বাজে। যেতে যেতে আরো প্রায় এক ঘন্টার মত লাগবে।
দিপ্তীর কত ইচ্ছা ছিল আজকের দিনটা সবার সাথে কাটাবো। কিন্ত.!
লক্ষ্ণীটা মনে হয় এখন বাসায় একা একা কাঁদছে আর আমার উপর আসমান সমান রাগ করে আছে। ফোন দিলে আমার সাথে কথাও বলবে না।
মেয়েটাকে আমি অনেক ভালোবাসি। সেই ছয় মাস ওকে ভালোবেসে আসছি। মেয়েটা অসম্ভব লক্ষ্ণী। মাত্র কয়েকদিন কথা বলেই বুঝতে পেরেছিলাম আমার মত অগোছালো দুষ্টু ছেলের জীবনে এ লক্ষ্ণী মেয়েটার খুব দরকার।
আমাদের ফেইসবুকের মাধ্যমে ওর সাথে আমার পরিচয়।প্রথম চ্যাট হয় মে মাসের ৮ তারিখ ২০১৭ তে প্রথমে ম্যাসেজ, বন্ধুত্ব, ফোনে কথাবলা, দেখা, ভাললাগা। তারপর সেই ভাললাগা থেকে ভালবাসা। আমি ওর ভয়েসটা শুনেই প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। তারপর আমাদের দেখা হল। দেখতে ও একদম অপ্সরী না হলেও আমার চোখে অনেক ভাল লেগেছিল। কি যেন এক মায়া।
সরাসরি ওকে বললাম না ওকে ভালবাসার কথা। যদি বন্ধুত্বটা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্ত আমার কথার ধরন শুনে ও হয়ত ঠিকই বুঝতো। তারপর ও আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিল। তখন ওকে অনেক মিস করতাম। ম্যাসেজ এর রিপ্লাই করত না।
এভাবে চলতে চলতে হঠাৎ ও একদিন ম্যাসেজ এর রিপ্লাই করল। হয়তবা দিপ্তী আমাকে একটু হলেও মিস করত। তারপর থেকে আমাদের মাঝে আবার বন্ধুত্ব। এবার আর ভালবাসার কথা ওকে বলতে সাহস পেলাম না।আবারও যদি হারিয়ে ফেলি ওকে। তারপর থেকে আমি বন্ধুর চেয়ে বেশী কিছু ভাবতাম না দিপ্তীকে।
এভাবে চলতে থাকে।
একসময় বলে দিল ভালবাসার কথা দিপ্তী এবার ও ভাবছে আমি যোগাযোগ বন্ধ করে দেই কিনা। কারন তখন আমি ওর ভাল বন্ধু হয়ে উঠেছিলাম সাথে সাথে ভালবাসার প্রথম একজন।ভালবাসি বলার আগে দিপ্তী কে আমি অনেক রাত জাগিয়ে রাখছি আর অনেক কাঁদিয়েছি তবুও পিছু হাটেনি।
কিন্ত যতই দিন যেতে থাকে ওর প্রতি আরো দুর্বল হয়ে যেতে থাকলাম আমি কখনো ওকে বোঝতে দেই নি। ওকে যত দেখতাম ততই ভালবাসতে থাকলাম।
আস্তে আস্তে খেয়াল করলাম দিপ্তীর আমার প্রতি ফিলিংস টা বাড়তে থাকল আর এতটাই বারল দিপ্তী হয়ত মনের অজান্তে আমাকে আমার থেকে বেশী ভালবাসতে শুরু করেছিল।
আমি শুধু অপেক্ষায় ছিলাম- হয়তো কোন গোধুলী লগনে অথবা পরন্ত বিকেলে অথবা কোন এক বৃষ্টি ভেজা দুপুরে অথবা মাঝ রাতে ফোন দিয়ে বা এসএমএস আমাকে বলবে – ‘দিপ্ত তোমাকে ভালবাসি।’তার অবসান হল ২১ অক্টোবর ২০১৭ তে রাত ১০.৫৪ তে।
কিন্ত দিপ্তী একদিন আমার সাথে খুব রাগ করে আমাকে বলে দিল আমি যেন ওকে আর ফোন না দেই। ওর সাথে যেন আর যোগাযোগ না করি। তখন আর আমার বুঝতে বাকি রইল না এটা ভালবাসার অভিমান। অভিমান করে আর কত দিন থাকা। দুদিন পর সব অভিমান ভেঙ্গে আমাকে জানিয়ে দিল ও আমাকে ভালবাসে একটু প্রবলেম কারনে বলেছিল এখন আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে না তাও বলছে । সেইদিন থেকেই আমাদের একসাথে পথ চলা।
সুখে-দুঃখে একজন আরেক জনের পাশে ছায়ার মত লেগে থাকা।
দিপ্তী একটা ব্যাপারে মাঝে মাঝে মন খারাপ করত আর বলত “তুমি তো এর পর আমাকে টাইমই দিবে না।কাজ নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকবা। আজ ওর এই কথাটা খুবই মনে পড়ছে। কিন্ত কোন উপায় ছিল না।।
(কল্পনা বাকিটা.....লিখতে অনেক কষ্টকর কারন এই প্রথমবার লিখচ্ছিলাম...
ওর কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে জ্যাম ছেড়ে গেছে খেয়ালই করিনি। বাসায় চলে এসেছি। বাসায় আসতেই দরজাটা খুলে দিয়েই দিপ্তী আমার সামনে থেকে চলে গেল। আমাকে কিছু বলার সুযোগই দিল না। বুঝতে পারলাম চরম রেগে আছে।
বারান্দায় চুপচাপ দাড়িয়ে আছে। আমি গিয়ে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বললাম
– প্লিজ লক্ষ্ণীটি রাগ করে না। বাবুনি আমার। আমি কি ইচ্ছা করে দেরী করেছি…?
: উফ্!! দিপ্ত ছাড়ো তো আমাকে। এই বলে আমার কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে চলে গেল।
একটা অন্ধকার রুমে গিয়ে বসে আছে। বুঝতে পারলাম ওখানে বসে ও কাঁদছে হয়তো। অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি ওকে। অনেক সরি বলে বলে রাগটা ভাঙ্গাতে হবে। আর গিফ্টটা দিতে হবে।
অন্ধকার রুমে গিয়ে লাইট টা অন করলাম। লাইট অন করার সাথে সাথেই অনেক গুলো কন্ঠের চিৎকার শুনতে পেলাম-” সারপ্রাইজ… Happy six month ending day.
আমি শুধু অবাক হয়ে দেখলাম আমাদের একদল বন্ধুবান্ধব। সবাই হাসছে.. সাথে দিপ্তীও।
আমি বোকার মত বললাম
-মানে কি? তোরা সব কোথা থেকে আসলি?
দিপ্তী বলল-
: তোমাকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য এই প্লান। আর আমি রাগ করিনি। আমিতো জানি প্রবলেম না থাকলে তুমি কখনও এমন করতে না। আমি তোমাকে না বুঝলে কে বুঝবে বলো…
– তাহলে আমি বাসায় আসার পর কথা বলোনি, বারান্দায় গিয়েও কেমন করলে…
: আরে বোকা ওটা তো শুধু অভিনয় করেছি। সারপ্রাইজ দিব বলে…. অনেক ভালবাসি তোমাকে দিপ্ত।
আমার ইচ্ছে করছিল চিৎকার করে পৃথিবীকে বলি আমি এই লক্ষ্ণী মেয়েটাকে অনেক অনেক বেশী ভালবাসি…।
আমি গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে বললাম
– আমিও তোমাকে চরম ভালবাসি বাবুনি।
তখন সব বন্ধুরা একসাথে যক্ষা রোগীর মত কাশি দিয়ে তাদের উপস্থিতি জানান দিল। তারপর দিপ্তী আমার কাছ থেকে নিজেকে তাড়াতাড়ি ছাড়িয়ে নিলো। এবার অবশ্য কোন অভিমানের অভিনয়ে নয়। লজ্জা পেয়ে। লজ্জা পেলে যেন অনেক বেশী সুন্দর লাগে লক্ষ্ণীটাকে। আমি মুগ্ধ হয়ে শুধু দেখছি আমার লক্ষ্ণীটাকে…...

Popular posts from this blog

প্রথম দেখাতে আমি প্রেমে পরেছি তোমার..

পাত্রী যখন ছাত্রী.....অসাধারণ একটা ভালোবাসার গল্প আশা করি ভালো লাগবে...

এই পৃথিবীতে নিঃশ্বাস নিতে যে বড্ড কষ্ট হচ্ছে।

পাশের বাসায় আসা নতুন ভাড়াটিয়ার সুন্দরী মেয়েটিকে হঠাৎ আমার নজরে পড়লো ।

Keno Ei Nishongota PARTHO - Lyrics IN BANGLA