পাত্রী যখন ছাত্রী.....অসাধারণ একটা ভালোবাসার গল্প আশা করি ভালো লাগবে...
প্রায় মিনিট পাঁচেক হবে,আমি পড়াতে এসে বসে রইলাম।এখনও ইশিতা মানে আমার ছাত্রী আসার নামই দেখতেছি না।পড়বে না নাকি,,,,?ধ্যাত,
:-কেমন আছেন,স্যার?
আমার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে বলল,ইশিতা।
:-এইতো আছি একরকম।তোমার খবর কি?(আমি)
:-ভালো।(বসতে বসতে বললো,ইশিতা)
:-আজ এতো সাজগোজ করে আসার কারণ কি?কোথায়ও যাবে নাকি?(আমি)
:-না,স্যার।আপনা
ে কথাটা বললো,যা আমার কানে পৌছালো)
:-মানে,,,?
:-না,স্যার।কিছু
:-নাও বই নাও।আর এতদেরী করে আসো কেন?তোমার পরিক্ষার তো চারদিন বাকি,তাইনা?
:-হুমম,আসলে স্যার সাজতে সাজতে একটু দেরী হয়ে গেলো।আচ্ছা,স্যা
র,শাড়ীতে এবং সাজগোজে আমায় কেমন লাগছে,,,,?(ইশিত
:-হুমম,ভালো।(আম
:-শুধু ভালো,,,?(মন খারাপ করে)
:-না না,খুব ভালো।এবার তো বই নাও,,,,,
:-স্যার,আজকে না আমার পড়তে মন চাইতেছে না,,,
:-তাহলে আমি আজ আসি,,,,,,
এই বলে আমি উঠতে যাবো,,,,,
:-স্যার উঠছেন কেন?আমি তো বলি নাই পড়বো না,শুধু বললাম মন চাইতেছে না,,,,,
:-ও,,,তাহলে আর কোন কথা না বলে পড়তে বসো,,,
:-আচ্ছা,,,তার আগে আমা কয়েকটা কথার জবাব দেনতো,,,
:-আবার,,,আচ্ছা বলো,,,
:-আচ্ছা,আমাকে আপনার পছন্দ হয়,,,?মানে কেমন লাগে,,,,?
:-ভালো।
:-তাহলে তো,আর কোন কথাই নাই,,,,,
:-মানে,তুমি কি বলতে চাইছো,,,,,?(আমি
:-আমি আপনাকে বলতে চাইছি যে,আমি আপনাকে ভালোবাসি,,,,,(ই
শিতা)
:-ভালোবাসি।হা হা হা,,,,তুমি হয়তো ভুলে গেছো আমি তোমার কি লাগি,,,?
:-আপনি আমার স্যার হোন বা যাই হোন।তাতে আমার কিছুই আসে যায় না।আমি শুধু এতটুকু জানি যে,আমি আপনাকে ছাড়া বাঁচবো না।আমি আপনাকে ভালোবাসি,,,,(এক
:-আস্তে কথা বলো,,,,
:-আমি আস্তেই কথা বলতেছি।এখন আপনি আমাকে বলেন তো আপনি আমাকে ভালোবাসেন কিনা,,,,?
:-দেখো ইশিতা,আমি জানি না তুমি আমায় কতটুকু ভালোবাসো।আমি শুধু এতটুকু জানি যে,তুমি আমার ছাত্রী।আমার সাথে তোমার যায় না।সত্যি বলতে কি,আমিও তোমাকে পছন্দ করি।কিন্তু এই পছন্দ সেই পছন্দ না।যেটা তুমি ভাবতেছো।আর সামনে তোমার পরিক্ষা,তুমি এসব নিয়ে না ভেবে পড়ালেখায় মন দাও।এতে তোমার অনেক ভালো হবে,,,,,,(নরমসু
রে বললাম,আমি)
:-আপনি আমাকে যাই বলুন,তা নিয়ে আমার মাথা ব্যথা নাই।আমি আপনার কাছে যা জানতে চাইছি সেটা বলুন।তা না হলে এর ফল ভালো হবে না,,,,,
:-এই মেয়ে,,,তোমার সমস্যাটা কি?হুম।আমি তোমাকে পড়াতে এসেছি।আজাইরা আলাপ করতে না।আগামীদিন থেকে আমি আর তোমাকে পড়াইতে আসতেছি না,,,,,
এই বলে আমি পড়ার টেবিল থেকে উঠে চলে আসতেছি,,,,,
:-ওই,আপনি নিজেকে কি ভাবেন,,,?হুম।আম
:-সেটা সময়েই বলে দিবে।এককাজ করো,এসব চিন্তা বাদ দিয়ে পড়ালেখায় মন দাও।আর আমি সত্যি বলছি,আগামীদিন থেকে আমি আর আসছি না,,,,,,,
এই বলে আমি চলে আসার জন্য
ইশিতার রুম থেকে বাহির হয়ে আসলাম।তখনই,,,
:-বাবা,আমি তোমার আর ইশিতার মধ্যকার কিছু কথা শুনেছি।তুমি ওর কথায় কিছু মনে করো না।আর তুমি ওকে পড়াতে আসবে।সামনে ওর পরিক্ষা।এখন তুমি যদি ওকে না পড়াও তাহলে পড়াবেটা কে,,,?এখন তুমি ওকে যদি না পড়াও,তাহলে আমরা টিচার পাবো কোথায়,,,?বাবা,ত
:-আন্টি,আমার পক্ষে ওকে পড়ানো সম্ভব না।আপনিই বলেন,এসবের কোন মানে হয়?না আন্টি আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না,,,,
:-বাবা,তুমি এভাবে না করতে পারো না,,,,,
:-তা ছাড়া আমার আর কিছু করার নেই,,,(আমি)
:-কিছু করার নেই মানে।বাবা,ওর পরিক্ষার আর মাত্র চারদিন বাকি।তুমি এমন করতে পারো না।(আন্টি)
:-একথাটা আপনি ইশিতাকে একটু বুঝিয়ে বলুন যে,ওর এখন পড়াশোনা করার দরকার,সামনে ওর পরিক্ষা আর হ্যা, আপনি যেহেতু এতো করে বলছেন,আমি আসবো।
:-আচ্ছা,আমি ইশিতাকে বুঝিয়ে বলবো।আর বাবা,তুমি কিন্তু অবশ্যই আসবে,,,,
:-আচ্ছা,এখন তাহলে আমি আসি,,,
এই বলে আমি পেছন দিকে একফাক তাকিয়ে দেখলাম ইশিতা দরজার পাশে দাড়িয়ে আছে।তারমানে ইশিতা,আমার আর তার মায়ের মধ্যকার আলাপ গুলো দরজার পাশে থেকে শুনেছে।
শুনলে আমার কি?
আমি আর কিছু না ভেবে ইশিতাদের বাসা থেকে বাহির হয়ে আসলাম।
"কি মেয়েরে বাবা?সামনে পরিক্ষা।কোথায় এখন ভালো করে পড়াশোনা করবে।আর তা না করে কি সব নিয়ে ভাবছে।"
ধ্যাত,এই মেয়েটা আমার মেজাজটা খারাপই করে দিলো।
কিন্তু আপনারা এটা ভাববেন না যে,ইশিতা দেখতে খারাপ?
আসলে ইশিতা দেখতে যেমন সুন্দর তেমন মায়াবতি ও এবং অনেক মেধাবিও বটে।এককথায় বলতে পারেন,ইশিতা হবে যেকোন ছেলের দেখার ক্রাশ।
কিন্তু আমার এতে করে কোন মাথাব্যথাই নেই।
কেন নেই,,,?
সেটা আমি আপনাদের এখন বলতে পারবো না।
ওহ হো,,,
আপনাদের তো আমি আমার পরিচয় দিতেই ভুলেই গেছি।
তাহলে আপনাদের আমার পরিচয়টা দিয়েই দিই।
তাহলে শুনুন,,,
আমি রাজু।এবারে মাস্টার্স শেষ করেছি এবং আজ থেকে আরো এক সপ্তাহ আগে একটা বেসরকারি প্রতিষ্টানে চাকরি ও পেয়ে গেছি।
প্রায় সকল টিউশনিই ছেড়ে দিয়েছি।
শুধুমাত্র ইশিতাদেরটা ছাড়তে পারি নাই।
কেন পারি নাই?
সে কারণটা হলো ইশিতার সামনে ইন্টারের ফাইনাল পরিক্ষা।
মেয়েটা আমাকে খুব ভালোবাসে,সেটা আমি ভালো করেই বুঝি।আর ওকে আমি ও পছন্দ করি।কিন্তু এতে করে আমার কিছুই করার নাই।
আজ থেকে সাত বছর আগে,ধরেন আমার ইন্টারের ফাইনাল পরিক্ষার পরেই আমি গ্রাম থেকে এই অচেনা শহরে এসে উঠি নিজেকে প্রতিষ্টিত করার জন্য।
হ্যা,আজ আমি পেরেছি নিজেকে প্রতিষ্টিত করতে।
এমনও সময় আমার গেছে,যে আমি না খেয়েও ছিলাম।
এই শহরে এসে কষ্টটাকে আমার জীবন সঙ্গী হিসেবে নিয়ে আমার পড়াশোনা চালিয়ে যাই।
আবশ্যক,আমার পড়াশোনা চালানোর খরচ চালাতে এবং বাড়িতে টাকা পাঠাতে আমার করানো টিউশনি গুলোই এই পর্যন্ত ভুমিকা পালন করে গিয়েছে।এছাড়া আমার আর কোন উপায়ই ছিলো না।
আপনাদের তো বলাই হয়নি,,,,
আমি হলাম একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় ছেলে।বাড়িতে আমার মা-বাবা আর ছোট এক ভাই-এক বোন রয়েছে।
আমি আমার পরিবারের কষ্ট সহ্য করতে না পেরে এ শহরে আসি। আর আমাকে প্রত্যেক মাসে মাসে বাড়িতে টাকা পাঠাতে হয়।
আপনারা হয়তো এটা ভাবছেন,আপনাদের আমি কেন এসব বলছি?
এসব বলার কারণটা আপনারা বুঝবেন আমার লেখার পরিপেক্ষিতে।
যাইহোক আমি এবার ইশিতার সম্পর্কে কিছু বলি,,,,
ইশিতা হলো তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান।তার মা-বাবা তাকে খুব ভালোবাসে।টাকা-প
আর তার মা-বাবা হলো সহজ সরল মনের মানুষ।
আমার মতে উনাদের মত মানুষই হয় না।
আমি আজ দুবছর ধরে ইশিতাকে পড়িয়ে আসছি।
তাই উনারা আমাকে নিজের ছেলের মতোই দেখে।উনারা আমার প্রয়োজনে-অপ্রয়ো
আমি যতগুলো টিউশনি করাইতাম,সবগুলো থেকে আমি এই টিউশনিটাতে যথার্থ পরিমানে অর্থ পেতাম।যার কারণে,আমাকে বাড়িতে টাকা পাঠাতে হিমশিম খেতে হতো না।
আপনাদের তো একটা কথা বলাই হয় নাই,,,,,,
আমার এতো তাড়াতাড়ি চাকরি পাওয়ার পেছনে যার অবদান রয়েছে,তিনি হলেন ইশিতার বাবা।
উনার সহযোগিতায় আমি বিনা ঘুষে এবং বিনা পরিশ্রমে এত সহজে চাকরি পাই।
কারণ,বর্তমানে মামা-খালু ছাড়া চাকরি পাওয়াই দুষ্কর ও ভাগ্যের ব্যাপার।আর সেটা আমায় আপনাদের আর বুঝিয়ে বলতে হবে না।আপনার এসব ভালোই বুঝেন।
আপনারা হয়তো বা,আমার এসব কথা বলার কারণটা বুঝে গিয়েছেন।আর যদি বুঝে না থাকেন,তাহলে আমিই বুঝিয়েই বলি,,,,,
ইশিতাদের অবস্থান আর আমাদের অবস্থানের কথাতো আপনাদেরকে আমার আর বলতে হবে না।
ইশিতার বাবা-মা আমার জন্য যাই করেছেন,তা আমার জন্য অনেক সৌভাগ্যের।
এখন আপনারাই বলেন,আমার কি উচিত হবে,উনাদের সরলতার সুযোগ নেওয়া,,,?
এসকল কথা বিবেচনা করে,আমি ইশিতার দেওয়া ভালোবাসার প্রস্তাব প্রত্যাখান করি।
যাইহোক,আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে আমি আমার ভাড়া বাসায় পৌছে গেলাম।
বাসায় এসে আমি শুয়ে রইলাম।
এছাড়া এখন আমার আর কিছুই করার নাই।
প্রায় সন্ধ্যা নেমে আসতেছে,,,
না শুয়ে থাকতে আর ভালো লাগছে না।
না,আম্মুকেই ফোন দিই।
আম্মুর সাথে কথা বললে আমার মন ভালো হয়ে যায়।
যেইভাবা সেই কাজ।
প্রথমবার রিং হতেই ফোনটা রিসিব হলো,,,,
:-হ্যালো,আম্মু,
:-কিরে হঠাৎ এই অসময়ে ফোন দিলি?কিছু হয়েছে নাকি,,,?(আম্মু)
:-আম্মু,তুমিও না?আমার আবার কি হবে?ভালো লাগছিলো না,তাই তোমাকে ফোন দিলাম,,,(আমি)
:-ও,,,আসলে মায়ের মন তো,তাই,,,
:-আচ্ছা,আব্বু,ন
:-হ্যা,রে ওরা ভালো আছে।তোর বাবা মসজিদের দিকে যাচ্ছে আর নিলয়-নিশি ওরা আমাকে আমার হাতের কাজে সাহায্য করছে,আচ্ছা,তুই তো মাস শেষ হওয়া ছাড়া আসবি না,তাই না?
:-হুমম।আচ্ছা মা,তুমি কাজ করো।এখন রাখি।
:-আচ্ছা রাখ,,,,,
এই বলে ফোন রেখে দিয়ে আমি বাহির হলাম মসজিদের উর্দেশ্যে।
নামাজ শেষ করে বন্ধুদের সাথে কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে,বাহির থেকে নাস্তা সেরে বাসায় এসে আবারও শুয়ে রইলাম।
বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবনার জগতে ডুব দিলাম,,,,
:-স্যার,আপনাকে না আমার খুব পছন্দ হয়েছে।আমাকে আপনার পছন্দ হয়েছে?
আমি পড়ানোর টেবিলে বসতেই,একথাটা বলল ইশিতা।যদিও তখন আমি তার নামই জানতাম না।
আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
কি মেয়েরে বাবা?কোথায় আমায় স্যার হিসেবে সালাম দিবে।অথচ,তা না,করে আমাকে এটা কি বলল?
:-কি হলো,স্যার?কথার জবাব দিলেন না যে?নাকি আপনি কথা বলতে পারেন না,,,হা হা হা...
:-এই যে,আমি তোমার স্যার হই।ঠিক আছে?আর যা বলবে তা কথার লিমিট রেখে বলবে,,,,?(আমি)
:-স্যার,আমি কি আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করে ফেললাম নাকি?(মনখারাপ করে)
:-আসলে তা না।আর এতে করে তোমার মন খারাপ করার কি আছে?(একটা হাসি দিয়ে বললাম,আমি)
:-আসলে স্যার,আমার আব্বু-আম্মু বলে আমি একটু দুষ্ট প্রকৃতির মেয়ে।আপনি কিছু মনে করবেন না।আমি আপনার সাথে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবো,,,,
:-আসলে আমার এখানে বলার মতো কিছুই নেই।এখন নাও বই নাও।
:-সেকি স্যার।আমরা এখন একে অপরের অপরিচিত।কোথায় এখন আমরা পরিচিত হবো।আর আপনি কি না বই নিতে বলেছেন,,,
:-আচ্ছা,সরি,,,এ
:-সেকি স্যার,আপনি আমার নামই জানেন না,,,?আমার নাম হলো ইশিতা।এবার ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি।আর আপনার পরিচয় বলতে হবে না,আমি আপনার পরিচয় জানি।আপনার নাম হলো রাজু।এবারে মাস্টার্সে ভর্তি হলেন তাই না,,,,?
:-হুমম।তা তুমি আমার ব্যাপারে এসব জানলে কেমন করে?(আশ্চার্য হয়ে,বললাম আমি)
:-আমি গতকালকে আপনাকে আব্বুর সাথে কথা বলতে দেখে আব্বুকে আপনার ব্যাপারে জিগ্গেস করে সব জানলাম।
:-ও,,আচ্চা।
এভাবে ইশিতাকে পড়ানোর ১ম দিন কেটে গেলো।
ওকে পড়াতে গিয়ে বুঝলাম,মেয়ে আমার চাইতেও পাকা।
কথা-বার্তায় তার চতুরতা দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম।
আমার কাছে এমন মনে হলো যে,ও আমার টিচার আর আমি ওর ছাত্র।
যদিও আমি এর আগে অনেকগুলো টিউশনি করিয়েছি।কিন্তু আমার কাছে কখনও এমটা কখনো মনে হয়নি।
যাইহোক,পরদিন আমি ইশিতাকে পড়াতে গেলাম।
কিন্তু আজ সে পড়ার টেবিলে নেই।
আমি গিয়ে আমার আসনে বসলাম।আমাকে ইশিতার আম্মু দেখে ইশিতাকে ডাক দিলো পড়তে আসার জন্য।
তাই আমি কোন কথা না বলে চুপচাপ বসে রইলাম।
টেবিলের দিকে চোখ পড়তেই আমি একটি কাগজের টুকরো ভাজ করা অবস্থায় দেখলাম।
কাগজটা হাতে নিয়ে খুলেই তো আমি হা হয়ে গেলাম,,,,
ঠিক তখনই ইশিতা আসলো,,,,,
এসেই আমাকে লম্বা করে সালাম দিয়ে বলল,,,,
:-স্যার,বসতে পারি,,,?(ইশিতা)
:-হুমম,,,,
ও বসার পর,
আমি কাগজের টুকরোটা টেবিলে রেখে দিয়ে বললাম,
:-এসব কি ইশিতা,,,?
:-কি সব,,,?
:-তুমি কাগজের টুকরায় কি লিখেছো,,,,
:-যেটা সত্য সেটা।সত্যি বলছি স্যার,আপনাকে হাসি অবস্থায় সেইই লাগে,,,,,
:-ইশিতা,তুমি কিন্তু লিমিট ক্রস করতেছো,,,
:-ধ্যাত,,,,স্যা
:-তুমি কি আসলে এইরকম নাকি?
:-স্যার,আপনি যা ভাবেন।এখন বই নিই।কি বলেন?
:-হুমম,,,
এই কথার পর আমার আর কিছুই বলার ছিলো না।
সত্যি বলতে মেয়েটা একটু বেশী কথা বলে।
প্রথম প্রথম ওর এতো বেশী কথা বলাটাকে নিয়ে বিরক্ত লাগলেও পরে ঠিকই ওকে পড়াতে পড়াতে মানিয়ে নিই নিজেকে তার সাথে।
ঠিক এই মুহুর্তে আমার ভাবনার বিচ্ছেদ ঘটলো ফোন আসার শব্দে।
আমাকে কে আবার এখন ফোন করলো,,,?
ফোন হাতে নিয়ে দেখি "আন্টি" নামে সেভ করা নাম্বার ভাসছে।
তার মানে "আন্টি" মানে ইশিতার মা ফোন করেছে।
কেন উনি ফোন করেছেন?
ফোন রিসিব করলেই জানতে পারবো,,,,
এই চিন্তা করে আমি ফোনটা রিসিব করলাম,,,,
:-হ্যালো আন্টি,,,,(আমি)
:-আমি ইশিতার বাবা,,,,
:-ওহ আংকেল,,,,কেন ফোন দিয়েছেন?(আমি)
:-বাবা,তুমি একটু আমাদের বাড়িতে আসতে পারবে,,,?(ইশিতা
:-কেন,আংকেল?এই অসময়ে!কিছু হয়েছে নাকি?(আমি)
:-আরে তুমি আসতো।তারপর এসে নাহয় জানবে।(ইশিতার বাবা)
:-জ্বী আংকেল,,,,
এটা বলে ফোন কেটে দিয়ে চিন্তা করতে লাগলাম,কি জন্য ইশিতার বাবা আমাকে এই মুহুর্তে যেতে বলল,,,?
নাকি ইশিতা কিছু করে বসেছে?
মেয়েটাতো আবার জেদী টাইপের।
না না,আমার পক্ষে এখন আর কিছু ভাবা সম্ভব হচ্ছে না।
অতঃপর আমি রওয়ানা দিলাম।
উর্দেশ্য এখন ইশিতাদের বাসা।
বিভিন্ন চিন্তা ভাবনা করার মাধ্যমে আমি ইশিতাদের বাসার সামনে চলে আসলাম।
কলিংবেল চাপ দেওয়ার সাথে সাথে দরজা খুলে গেলো।
ভেতরে ডুকে সামনে তাকিয়ে দেখি ইশিতা অপরদিকে মুখ করে দাড়িয়ে আছে,,,,
:-আংকেল কোথায়?আর আমায় কি জন্য আসতে বলেছে?(আমি)
:-উনারা ভেতরের রুমে আছে।আর কি জন্য আসতে বলেছে সেটা আমি কি করে জানবো...?হুহ,,,
:-ওহহ,,,,তা তোমার পড়ালেখা নাই?
:-সেটা কি আপনাকে বলতে হবে নাকি?যান,আব্বু কি জন্য ডেকেছেন,সেটা শুনে আসেন,,,,
আমি আর কিছু না বলে ভেতরের রুমের দরজার সামনে দাড়িয়ে দেখি ইশিতার আব্বু-আম্মু কি নিয়ে যেন কথা বলছে,,,,,
তাই আমি সালাম দিয়ে বললাম,,,,
:-আংকেল আসবো,,,,?(আমি)
সালামের উত্তর দিয়ে,,,,
:-আসো বাবা,এতে অনুমতি নেওয়ার কি আছে?(ইশিতার বাবা)
আমি কিছু না বলে ভেতরে ডুকলে,,,
:-এতক্ষন তোমাকে নিয়েই কথা বলছিলাম।দাড়িয়ে কেন?বসো।(ইশিতার
:-জ্বী আন্টি।
বসতে বসতে বললাম।
:-তোমায় কি জন্য আসতে বলেছি,জানো?(ইশি
:-না বলবে জানবো কি করে?আংকেল।(আমি)
:-তাহলে শুনো...আর তুমি যাও নাস্তা নিয়ে আসো,,,(আংকেল,আন
একথা বলার পর ইশিতার মা নাস্তা আনতে চলে গেলো,,,
:-তাহলে শুনো,,,
:-জ্বী,,,
:-তুমিতো প্রায় আজ দুবছর ধরে ইশিতাকে পড়াইতেছ।তাইনা?
:-জ্বী।
:-আমি জানি না তুমি ইশিতাকে পছন্দ কর কিনা?তবে আমি জানি ইশিতা তোমাকে কতটুকু পছন্দ করে এবং ভালোবাসে।আমি তোমাকে ইশিতার পছন্দে তার টিউটর হিসেবে রাখি।সত্যি বলতে কি,আমি আর তোমার আন্টিও তোমাকে খুব পছন্দ করি।আমাদের কোন ছেলেও নাই।তোমাকেই আমরা নিজের ছেলের মতই দেখে আসছি,এবং দেখি।আমি ইশিতার আম্মুর কাছে থেকে সব শুনেছি।
অন্য কোন ছেলে হলে হয়তো বা ইশিতার দুর্বলতার সুযোগ নিতো।কিন্তু তুমি তা করনি।সত্যি,তোমা
:-..........(আম
:-তোমার কাছে আছে আমাদের একটা চাওয়া আছে।আশা করি তুমি আমাদের চাওয়াটা পুরন করবে,,,,?
:-আমার কাছে আপনাদের কি এমন চাওয়া আছে?যা চাইতে আপনি আমার কাছে অনুরোধ করছেন।আর আপনি তো বললেন আমি আপনার ছেলের মতো।তাহলে আপনি অনুরোধ না করে কোন দ্বিধা ছাড়াই আমার কাছে সরাসরি চাইতে পারেন,,
:-এই জন্য তোমাকে আমার আরো ভালো লাগে।তাহলে শুনো,আমি চাই তোমার হাতে ইশিতাকে তুলে দিতে।যদি তুমি রাজি থাকো।
:-............
:-কি হলো কথা বলছো না যে?নাকি ইশিতাকে তোমার পছন্দ হয়নি?
:-............
:-তুমি যদি না করে দাও?তাহলে আমাদের কিছু করার থাকবে না।হয়তো বা আমি আমার মেয়েটাকে হারিয়ে ফেলবো,,,,,
:-হারিয়ে ফেলবেন মানে,,,?(মুখ খুলে বললাম)
:-ও বলেছে তোমাকে না ফেলে সে নিজেকে শেষ করেই ফেলবে।তুমিতো জানো ও কেমন?তাই বাধ্য হয়ে আমি তোমাকে এখনই আসতে বলেছি,,,,
:-কিন্তু ওরতো সামনে পরিক্ষা।এখন এসব নিয়ে আপনারা ভাবছেন কেন?
:-কি করবো?ওর মেজাজের কাছে আমাদের হার মানতেই হলো।জানো,তুমি চলে যাওয়ার পর ইশিতা কি করছিল?ও ঘরের দরজা বন্ধ করে দিয়ে বলছিলো,তুমি যদি ওকে বিয়া করতে রাজি না থাকো,তাহলে সে নাকি আত্নহত্যা করবে।পরে তোমার আন্টি ওকে বুঝিয়ে দরজা খুলে দেখে পাখার সাথে ওড়না ঝুলানো।
এটা দেখে তোমার আন্টি আমাকে ফোন দিয়ে বাসায় ডেকে এনে সবকিছু বললো।তারপর আমি ওকে ভরসা দিয়ে,তোমায় ডেকে আনলাম।এখন তুমিই বলো এছাড়া আমাদের আর কোন উপায় আছে?
:-আচ্চা আংকেল আপনি যেহেতু চাইছেন ইশিতাকে আমার হাতে তুলে দিতে,এতে করে আমার কোন আপত্তি নাই।তবে আমার মা-বাবা যদি রাজি থাকে,,,,(আমি)
:-সেটা নিয়ে তোমার চিন্তা করতে হবেনা।তুমি তোমার বাড়ির ফোন নাম্বারটা দাও।
:-জ্বী,এই নেন,,,(নাম্বার এগিয়ে দিয়ে)
:-আচ্চা আমি ইশিতাকে পাঠাচ্ছি।তুমি ওর সাথে কথা বলো।
এই বলে তিনি চলে গেলেন।
উনি চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পরেই ইশিতা নাস্তার ট্রে নিয়ে আসলো।
:-নাস্তা নেন,,,,(ইশিতা)
:-হুমম,,,,
নাস্তা নিতে নিতে আমি বললাম,,,
:-দাড়িয়ে আছো কেন?বস,,,
ও এসেই আমার পাশে বসলে,,,,,
:-একটু দুরত্ব বজায় রেখে বসো,,,,(আমি)
:-কেন?আপনি কি এখনও আমায় দুরে সরিয়ে রাখবেন নাকি?(অভিমানী কন্ঠে)
:-তার আগে তুমি এটা বলো,তুমি যে কাজটা করেছো সেটা ঠিক হলো,,,?(আমি)
:-কোন কাজ,,,?
:-পাখার সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্নহত্যা করার প্ল্যান,,,
:-আরে ধুরর,ওটাতো আমি আম্মুকে আর আব্বুকে ভয় দেখানোর জন্য করলাম।দেখলেন তো কিভাবে আম্মু-আব্বু রাজি হয়ে গেলো,,,,
:-তাই নাকি?তাহলে তো তোমার আব্বু আম্মুকে ঘটনাটা খুলে বলতে হয়,,,,
:-বলেই দেখেন।তারপর আমি কি করি?
:-কি করবে,,,,,
:-কি করবো?কি করবো,,,?
:-আমি কি করে জানবো,তুমি কি করো,,,?
:-ধ্যাত,কিছুই করবো না,,,,
এই বলে আমায় জড়িয়ে ধরলো,,,,,
:-আরে আরে কি করছো?তুমি ভুলে যেও না,আমি তোমার স্যার হই,,,,
:-আরে রাখেন আপনার স্যার গিরি।আগে বিয়েটা হোক,তারপর আপনাকে দেখে নিবো,,,,
:-তাই নাকি?ঐ তোমার বাবা আসছে,,,,
একথা বলার সাথে সাথে আমায় ছেড়ে দিয়ে,,,,
:-কই?
:-ঐতো আসতেছে,,,,,
আমার কথা পড়ার দেরী,উনি আসতে দেরী হয় নাই,,,,,,
:-তোমার মা-বাবার সাথে কথা বললাম।উনারা রাজি আছেন।(আমার দিকে উর্দেশ্য করে ইশিতার বাবা)
:-তাহলে তো আমারও আর কিছু বলার নাই,,,,(আমি)
:-তাহলে আর কি?কালকেই বিয়েটা সেরে পেলি,,কি বলো?(ইশিতার বাবা)
:-কালকেই,,,,?(আ
:-হুমম।বিয়ে কালকে হবে?অনুষ্টান করবো ইশিতার পরিক্ষার পরে,,,,(ইশিতার বাবা)
:-বিয়েটা ইশিতার পরিক্ষার,,,,,
আমাকে থামিয়ে,,,,
:-আব্বু,তুমি বিয়ের ব্যবস্থা করো,,,
এই কথা বলে ইশিতা আমার দিকে চোখ গরম করে চলে গেলো,,,
:-তাহলে আর কি?কালকেই বিয়ের ব্যবস্থা করেন,,(আমি)
:-আচ্চা ঠিক আছে।এখন চলো খেতে।
:-হুমম,,,,,,
অবশেষে,আর কি?
বিয়েটা হয়েই গেলো।
কিন্তু আপনাদের দাওয়াত দিতে পারলাম না।
সামনে অনুষ্টান আছে।তখন নাহয় আপনাদের দাওয়াত করবো।অপেক্ষায় থাকেন।