কথায় বলে, কুকুর পৃথিবীর একমাত্র প্রাণী যে কি না নিজের চাইতেও তার
মনিবকে বেশি ভালবাসে। আজকাল ইন্টারনেটের বদৌলতে ফেসবুক পেজগুলোতে কুকুরের
বিশ্বস্ততা নিয়ে নানান রকমের ভিডিও দেখতে পাওয়া যায়, জানা যায় বিভিন্ন
অজানা তথ্য। তাছাড়া যারা কুকুর পালেন, তারা অবশ্যই জানেন কুকুর কতটা
প্রভুভক্ত
ইতিহাসের
পাতা ধরে পেছন দিকে এগোলে আমরা দেখতে পাই, সেই আদিম সভ্যতার সূচনালগ্ন
থেকে চারপেয়ে এই জন্তুটি সবসময় মানুষের কাছাকাছি থেকেছে। শিকার, পশু পাহারা
দেয়া, বাড়ি পাহারা দেয়া থেকে শুরু করে যেকোনো বিপদ-আপদে কুকুর মানুষের
জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। কুকুর আর মানুষের বন্ধুত্ব নিয়ে গল্প-কাহিনী আর
সিনেমার কোনো অভাব নেই। কিন্তু পৃথিবীর ইতিহাসে কয়েকটি কুকুরের নাম
বিশেষভাবে উল্লেখ্য, যেগুলো স্মরণীয় শুধু তাদের অপার বিশ্বস্ততার জন্য, এ
খবরই বা কয়জন জানেন?
১. রুসওয়ার্প
ইংল্যান্ডের গার্সডেল
শহরের ধারেই ছোট একটা রেলস্টেশন, সেখানে সেটল-কার্লায়ল নামে একটা রেললাইনও
ছিল। কিন্তু ১৯৮০ সালে কোনো এক কারণে গার্সডেল রেলস্টেশনকে এই রেললাইনটি
বন্ধের জন্যে নোটিশ দেয়া হয়। এই রেললাইনটিকে বাঁচাতে তখন শহরের প্রায়
৩২,০০০ মানুষ একটি পিটিশনে সাক্ষর করে। মজার ব্যাপার, ৩২,০০০ মানুষের
সাক্ষরের সাথে পিটিশনে ছিল একটি কুকুরের পায়ের থাবাও! রুসওয়ার্প নামের
বাদামি-কালো রঙের ইংলিশ কলি এই কুকুরটি ছিল শহরের বাসিন্দা গ্র্যাহাম
ন্যুটেলের বিশ্বস্ত সঙ্গী। আর তাই মনিবের সঙ্গে প্রতিবাদে যোগ দিয়েছিল এই
প্রাণীটিও। ১৪ বছর বয়সী রুসওয়ার্পের পায়ের ছাপকে বৈধ একটি সাক্ষর হিসেবেই
পিটিশনে রাখা হয়েছিল।
গ্র্যাহাম ন্যুটেলের সঙ্গে রুশ্যাপ; Source: Network Rail media centre১৯৯০
সালের ২০ জানুয়ারির সুন্দর এক সকালে গ্র্যাহাম রুসওয়ার্পকে সঙ্গে করে তার
হোম টাউন বার্নলি থেকে সারাদিনের জন্যে ঘুরতে বের হন। গন্তব্য
ল্যান্ড্রিনড্রড ওয়েলস। কিন্তু সেদিন সারাদিন গ্র্যাহাম আর রুসওয়ার্প
বার্নলি ফিরে এলো না। দিন গড়িয়ে যখন পরদিন সকাল হলো, তখন টনক নড়ল
প্রতিবেশীদের, শুরু হলো খোঁজাখুঁজি। সপ্তাহজুড়ে পোস্টার লিফলেট ইত্যাদি
বিলি করা হলো, কিন্তু গ্র্যাহাম আর রুসওয়ার্পের হদীস কেউ পেল না।
প্রায়
৩ মাস পর অবশেষে এপ্রিলের ৭ তারিখ একটি পাহাড়ি ঝর্ণার পাশে তাদের খোঁজ
মেলে। গ্র্যাহাম জীবিত ছিলেন না, কিন্তু রুসওয়ার্প বৃষ্টি আর ১১ সপ্তাহের
ভয়াবহ শীত উপেক্ষা করেও মনিবের মৃতদেহকে
পাহারা দিয়ে রেখেছিল। ক্ষুধা-তৃষ্ণা আর ঠান্ডায় জর্জরিত রুসওয়ার্প ছিল
মারাত্মক দুর্বল। কিন্তু এত কিছুর পরও সে গ্র্যাহামের দেহ ফেলে কোথাও
যায়নি। সে এতই দুর্বল ছিল যে, তাকে পাহাড় থেকে বয়ে নিয়ে আসতে হয়।
শহরে
পর্যাপ্ত চিকিৎসার পর রুসওয়ার্প খানিকটা সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু বেঁচে
থাকার ইচ্ছা বুঝি মনিবের সাথেই চলে গিয়েছিল তার। আর তাই অনেক
সেবা-শুশ্রূষার পরও গ্র্যাহামের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার একটু পর সে-ও পৃথিবী
ছেড়ে চলে যায়। গ্র্যাহামের কফিনটি কবরে নামানোর সময় রুসওয়ার্প করুণ গলায়
যেভাবে আর্তনাদ করেছিল, গার্সডেলের লোকেরা বহুদিন তা মনে রেখেছে।
এবারের
গল্পটা আমেরিকার অবিস্মরণীয় কুকুর ববিকে নিয়ে, যে মনিবের প্রতি ভালবাসার
টানে অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলেছিল। ব্রেজিয়ার পরিবারের ২ বছর বয়সী এই স্কচ
কলি প্রজাতির কুকুরটি ছিল ফ্র্যাঙ্ক ব্রেজিয়ারের চোখের মণি।
১৯২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ফ্র্যাঙ্ক ও এলিজাবেথ ব্রেজিয়ার ছুটি
কাটানোর জন্য নিজ শহর সিলভারটন থেকে ইন্ডিয়ানা স্টেটের উদ্দেশ্যে গাড়ি করে
বেরিয়ে পড়েন। সঙ্গে আদরের কুকুর ববি তো রয়েছেই। কিন্তু বিধি বাম,
ইন্ডিয়ানায় পৌঁছে ছোট্ট ববি কী করে যেন আলাদা হয়ে গেল ব্রেজিয়ারদের কাছ
থেকে। অনেক খুঁজেও ববিকে না পেয়ে ভগ্ন হৃদয়ে ব্রেজিয়াররা সিলভারটনের
উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন। ববির আশা একপ্রকার ছেড়েই দিলেন দুজনে।
ফ্র্যাঙ্ক ব্রেজিয়ারের কোলে ববি; Source: Statesman journal১৯২৪
সালের ফেব্রুয়ারির এক সকালে সিলভারটনে নিজেদের বাড়ির দরজায় আঁচড়ের শব্দে
এলিজাবেথ একটু যেন ভয়ই পেলেন। পায়ে পায়ে গিয়ে সদর দরজা খুলতেই যা দেখলেন তা
বিশ্বাস করা যায় না। তার আদরের ববি দরজায় সটান দাঁড়িয়ে আছে! ববির অবস্থা
অবশ্য খুবই খারাপ। টানা ৬ মাসেরও বেশি সময় প্রায় ২,৫৫১ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে
ইন্ডিয়ানা থেকে সিলভারটন এসেছে ববি। তার শরীর হাড্ডিসার, বিভিন্ন অংশ
লোমহীন, পায়ের নখ বালি আর পাথরে লেগে ক্ষয়ে গেছে। ছোট্ট এই চারপেয়ে নায়কের
কথা রাতারাতি সবাই জেনে গেল।
ববির অভাবনীয় কীর্তির জন্যে সে পেয়েছিল
অজস্র পুরষ্কার। তার মাঝে রয়েছে অনেকগুলো মেডেল, ট্রফি, শহরের বিভিন্ন
স্থানের চাবি, এমনকি দামি পাথরখচিত কলারও। ববিকে নিয়ে ‘রিপ্লি’স: বিলিভ ইট
অর নট’ এ একটি লেখাও স্থান পেয়েছিল, এমনকি তার এই নায়কোচিত ভূমিকায় ববি
নিজেই অভিনয় করেছিল একটি ফিল্মে।
৩ বছরের মাথায় ১৯২৭ সালে ছোট্ট সাহসী ববির মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পর পোর্টল্যান্ডে পোষা প্রাণীদের কবরস্থানে তাকে কবর দেয়া হয়।
সিলভারটনের মানুষ তখন তার সম্মানে একটি পোষা প্রাণীদের প্যারেডের আয়োজন
করে। এরপর থেকে প্রতিবছর এই প্যারেডটি নিয়মিত হয়ে আসছে। সিলভারটন শহরে ববির
ছোট্ট একটি বাড়ি এবং অবিকল ববির মতো দেখতে একটি ছোট্ট ভাস্কর্যও তৈরি করে
শহরবাসী। তাকে শহরের নাগরিকের মর্যাদাও দেয়া হয়।
ববি আর তার ঘরের প্রতিকৃতি; Source: Twitter
৩. ফিডো
ল্যাটিন
ভাষায় ফিডো শব্দের অর্থ ‘বিশ্বস্ত’। কাজেই, ফিডো নামটি যেকোনো কুকুরের
জন্যেই নিঃসন্দেহে দারুণ একটি নাম। আব্রাহাম লিংকন তার কুকুরের নাম
রেখেছিলেন ফিডো, তার অনেক বছর আগে থেকেই রোমানরা কুকুরের জন্য এই নামের
প্রচলন শুরু করে। তো ফিডো নামের একটি কুকুরের বিশ্বস্ততার গল্প জানা যাক।
ইতালির ফ্লোরেন্স শহর থেকে খানিকটা দূরের ছোট্ট শহর বোর্গো স্যান লরেঞ্জো।
সেখানে কার্লো সোরিয়ানি নামের একজন শ্রমিক বাস করতেন। ১৯৪১ সালের এক শীতের
সন্ধ্যায় সোরিয়ানি ফ্যাক্টরি থেকে কাজ করে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তার পাশে
ছোট একটি আহত কুকুরছানা খুঁজে পান। মায়াবশত তিনি একে বাড়ি নিয়ে আসেন আর
সেবা-শুশ্রূষা করে সুস্থ করে তোলেন। কিছুদিনের মাঝেই কুকুরছানাটি
প্রাণচঞ্চল হয়ে ওঠে, দেহে রং ফিরে আসে। সোরিয়ানি তার নাম রাখেন ফিডো।
ফিডো
আশেপাশের সকলের মন জয় করে ফেলে সহজেই, সবার বন্ধু হয়ে যায় সে। প্রতিদিন
সকালে সে সোরিয়ানিকে কাজে যাওয়ার সময় বাস স্টেশন পর্যন্ত এগিয়ে দিতো,
সন্ধ্যাবেলা সোরিয়ানি বাড়ি ফেরা পর্যন্ত স্টেশনেই থাকতো। সোরিয়ানি ফিরে এলে
ফিডো ঝাঁপিয়ে পড়তো তার কোলে, এরপর দুজনে একসাথে বাড়ি ফিরতো।
সবকিছু
ঠিকভাবেই চলছিল, অন্তত বছর দুই পর্যন্ত। এর মাঝে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ গুরুতর
অবস্থায় চলে গেল। ১৯৪৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর সোরিয়ানির ফ্যাক্টরিতে একটি বোমা
হামলা হলো, সোরিয়ানি এতে দুর্ভাগ্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করল। ফিডোকে সে কথা
বলবার কে-ই বা ছিল? অন্যদিনের মতো সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সোরিয়ানির জন্য
অপেক্ষা করতে লাগলো, কিন্তু সোরিয়ানি ফিরে এলো না।
ফিডো
ভাবলো, বাড়ি গেলে হয়তো সোরিয়ানিকে দেখতে পাবে। সে ছুটে বাড়ি ফিরলো, কিন্তু
তাকে দেখতে পেল না। হতাশ ফিডো বন্ধুকে দেখার আশায় পরদিন বিকেলে আবার
স্টেশনে গেল, তবু দেখা মিললো না। তার পরদিন আবার, তার পরের দিনও। এভাবে
দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর ফিডো আগ্রহভরে প্রতিদিন
বিকেলে বাস থেকে সোরিয়ানিকে নামতে দেখার আশায় বসে থাকতে লাগলো। অবশেষে ১৪
বছর পর এই অপেক্ষার অবসান হলো তার, পৃথিবী থেকে বিদায় নিল ফিডো।
ফিডোর স্মরণে তৈরি ভাস্কর্য; Source: A path to lunchশহরের সবাই এই অপার বন্ধুত্বের কথা জেনে গেল। ইতালির জাতীয় দৈনিক ‘লা নাযিওন’
ফিডোকে নিয়ে একটি কলাম প্রকাশ করেছিল, যেখান থেকে মোটামুটি সমস্ত ইউরোপের
লোকজন ফিডোর কথা জানতে পারল। ফিডোকে স্মরণ করে শহরের টাউনহলে তার একটি
ব্রোঞ্জের মূর্তি তৈরি করা হয়।
১৯৫৮ সালের গ্রীষ্মের একটি ঝরঝরে দিনে
ফিডো যখন পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়, তাকে সোরিয়ানির কবরের বাইরে একটি জায়গায়
সমাধিস্থ করা হয়। ১৪ বছরের অপেক্ষার পর ফিডো অবশেষে বন্ধুর সঙ্গে একাত্ম
হয়ে যায়।
৪. গেলার্ট
এবার একটি পুরানো লোকগাঁথার বিখ্যাত
একটি কুকুরের করুণ গল্প শোনা যাক। অনেক অনেক কাল আগে উত্তর ওয়েলসের
বেডগেলার্ট নামে একটি গ্রামে লিওয়েলিন নামে এক রাজপুত্র ছিল। তারই পোষা
কুকুরের নাম গেলার্ট। মনিবের জন্য সর্বদা নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকতো
গেলার্ট। আর তাই তো রাজপুত্র কখনও তাকে কাছছাড়া করতেন না, করতেন অসম্ভব
আদর।
জানা গেছে, গেলার্টকে ইংল্যান্ডের রাজা জন
লিওয়েলিনকে উপহার হিসেবে দিয়েছেলেন। লিওয়েলিনের অবশ্য আরও অনেক কুকুর ছিল,
কিন্তু রাজার দেওয়া এই হাউন্ডটি কেন যেন তিনি অনেক বেশি পছন্দ করতেন।
রাজপুত্র ছিলেন খুব ভাল মাপের একজন শিকারী। শিকারে যাওয়ার সময় কখনওই
গেলার্টকে রেখে যেতেন না। প্রতিটি শিকারে যাওয়ার সময় তিনি বিশেষ এক ধরনের
ভেঁপু বাজাতেন, আর সেই শব্দে তার সবগুলো কুকুর বুঝে ফেলত যে এটি শিকারে
যাবার সংকেত। তৎক্ষণাৎ সবাই ছুটে আসতো, সেই সাথে গেলার্টও।
যে
দুর্ভাগ্যজনক দিনটির কথা বলছি, সেদিনও রাজপুত্র শিকারে যাওয়ার জন্য
ভেঁপুতে আওয়াজ করেন। সেই আওয়াজ পেয়ে তার সব কুকুর ছুটে এল, কিন্তু কেন যেন
গেলার্ট ভেঁপুর আওয়াজ খেয়াল করতে পারলো না। রাজপুত্র খানিকক্ষণ তাকে এদিক
ওদিক খুঁজে মন ভার করে তাকে ছাড়াই শিকারে চলে গেলেন। প্রাসাদে রয়ে গেল তার
স্ত্রী ও এক বছর বয়সী ছোট্ট ছেলে।
শিকার শেষে রাজপুত্র সন্ধ্যায়
প্রাসাদে ফিরলেন। সবার প্রথমেই গেলার্ট তাকে স্বাগত জানাতে দৌড়ে এল। হঠাৎ
রাজপুত্র খেয়াল করলেন, গেলার্টের সারা শরীরে আঁচড়ের চিহ্ন। চোয়াল রক্তমাখা,
লাল টকটকে তাজা রক্ত ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে পড়ছে দাঁত বেয়ে নিচে। গেলার্ট মহা
উত্তেজিত আর উৎফুল্ল। অজানা আশংকায় রাজপুত্রের মন ভারি হয়ে গেল, তিনি দৌড়ে
নিজ কামরায় এলেন, গেলার্টও তাকে অনুসরণ করল। কামরায় এসে তিনি আঁতকে উঠলেন।
তার ছোট ছেলেটির বিছানা ওলটানো, সমস্ত কামরা লন্ডভন্ড। কিন্তু ছোট
বাচ্চাটির কোনো চিহ্নই নেই কোথাও।
রাজপুত্র গেলার্টের দিকে তাকিয়ে
ভয়ঙ্কর রেগে উঠলেন। নিশ্চয়ই তার অনুপস্থিতিতে জানোয়ারটা তার বাচ্চাকে মেরে
ফেলেছে, হয়তো খেয়েও নিয়েছে। আর দেরি করলেন না, খাপ থেকে তলোয়ার বের করে
তিনি উৎফুল্ল গেলার্টের হৃৎপিণ্ড বরাবর তীক্ষ্ণ তলোয়ারটি ঢুকিয়ে দিলেন। পুরো সময়টা গেলার্ট অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল মনিবের দিকে।
গেলার্ট
যখন কাতর শব্দ করতে করতে মৃতপ্রায়, ঠিক তখন রাজপুত্র কোথায় যেন বাচ্চার
একটি আওয়াজ শুনতে পেলেন। কী হচ্ছে বুঝতে না পেরে তিনি ছেলের বিছানাটি সরিয়ে
দেখলেন, তা ছেলে হাসিমুখে শুয়ে আছে। আর ছেলেটির পাশেই বিশাল বড় এক নেকড়ে
রক্তাক্ত অবস্থায় মরে পড়ে আছে। ঘটনাটি বুঝতে রাজপুত্রের এক মুহূর্তও দেরি
হল না, তিনি বুঝলেন গেলার্ট আসলে নেকড়েটিকে মেরে বাচ্চাটিকে বাঁচিয়ে
দিয়েছে। আর সেই ঘটনাটি দেখাতেই মনিবের কাছে দৌড়ে গিয়েছিল সে।
রাজপুত্র
ছুটে গেলেন গেলার্টের কাছে, কিন্তু ততক্ষণে সে তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে
ফেলেছে। প্রিয় কুকুরকে নিজ হাতে হত্যা করে রাজপুত্র শোকে প্রায় পাগল হয়ে
গেলেন। তারপর ভগ্ন হৃদয়ে গেলার্টের মৃতদেহ তার রাজ্যের সবচাইতে উঁচু জায়গায়
সমাধিস্থ করলেন, যাতে সবাই তার এই বিশ্বস্ত কুকুরের কথা জানতে পারে। এরপর
থেকে গেলার্ট মানুষের মনে ও গল্পে স্থান করে নিয়েছে।
Advertisement
গেলার্টের সমাধিস্থল; Source: National Trust
৫. ক্যানেলো
স্পেনের
দক্ষিণপার্শ্বে কেডিজ শহরে নিভৃতে বাস করতেন এক বৃদ্ধ। শহরের হট্টগোল থেকে
একটু দূরে থাকতেই যেন পছন্দ করতেন তিনি। পরিবার-পরিজন বা বন্ধু-বান্ধব
বলতেও কেউ ছিল না তেমন। কিন্তু একা থাকাটা আর হয়ে উঠলো না আর, ছোট্ট
ক্যানেলো এসে তার জীবন কানায় কানায় পরিপূর্ণ করে দিল। একমাত্র সঙ্গী কুকুর ক্যানেলোর
সাথে প্রায়ই দেখা যেত বৃদ্ধকে। কখনও প্রাতঃভ্রমণে, কখনও উদ্দেশ্যবিহীন
ঘোরাঘুরি, আবার কখনও বা ফূর্তিতে ভরা বিকেল কাটাতেন তারা একসাথে। তবে
সপ্তাহে একদিন খুব সকালে তাদের যাত্রা শেষ হত পুয়ের্তো দেল মার হাসপাতালে
গিয়ে। বৃদ্ধের কিডনী সংক্রান্ত কিছু জটিলতা ছিল, তাই প্রতি সপ্তাহে
ডায়ালাইসিস করাতে হতো। হাসপাতালের ভেতর ক্যানেলোর যাবার অনুমতি ছিল না।
কিন্তু সঙ্গীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে সে সবসময় গেটের বাইরে দুই থাবার ভেতর
মুখ গুঁজে অপেক্ষা করতো। বৃদ্ধ না ফেরা পর্যন্ত একইভাবে বসে থাকতো। অবশেষে
বিকেলে দুজনে একসাথে বাড়ি ফিরতো।
এই ছিল দুজনের নিত্যদিনের রুটিন।
এলাকার সবাই তাদের চিনতো, তাই অপেক্ষমান ক্যানেলোকে সবাই হাসি দিয়ে স্বাগত
জানাতো। কিন্তু ভাল দিনগুলো খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায়, তাদের বেলায়ও তার
ব্যতিক্রম হলো না। আশির দশকের শেষ দিকের কথা। ক্যানেলো তার বৃদ্ধ সঙ্গীকে
নিয়ে প্রতিবারের মতো এবারও হাসপাতালে এলেন। বৃদ্ধ যাবার পর বাইরে বসে রইল
সে। কিন্তু এবার আর সব ঠিকঠাক গেল না।
ডায়ালাইসিসের সময় বৃদ্ধের খুব
শারীরিক জটিলতা দেখা দিল, ডাক্তাররা অনেক চেষ্টা করেও তা ঠিক করতে পারলেন
না। হাসপাতালের বিছানায় মারা গেলেন তিনি। ওদিকে ক্যানেলো কিন্তু তার কিছুই
জানে না। সে তবু ঠায় সটান বসে রইলো বৃদ্ধের ফেরার অপেক্ষায়। কিন্তু
প্রতিদিনের মতো কেউ এলো না তার জন্য।
বন্ধুর জন্য অপেক্ষারত ক্যানেলো; Source: Bowerland Cottage Holidaysক্যানেলো সেখান থেকে নড়ল না। সেই পুয়ের্তো দেল মার হাসপাতালের
গেটের বাইরেই সে অপেক্ষা করে যেতে লাগল দিনের পর দিন। স্থানীয় লোকজন বুঝে
গেল, কুকুরটি এখান থেকে যাবে না। তখন তারা সাধ্যমতো তাকে খাবার দিতে লাগল।
পথচারীরা যাওয়া আসার সময় তাকে অনেক আদর করতো, এছাড়া এটা সেটা খেতে দিত।
কিন্তু ক্যানেলো নতুন কোনো পরিবার খুঁজলো না, নতুন কাউকে সঙ্গী হিসেবেও
গ্রহণ করল না। পুরানো সঙ্গীর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে যেতে লাগল।
Advertisement
দীর্ঘ
১২ বছর পর ক্যানেলোর এই উদগ্রীব অপেক্ষার পালা অবশেষে শেষ হলো। ২০০২ সনের
ডিসেম্বর মাসের ৯ তারিখ, সে নিত্যদিনের মতো হাসপাতালের বাইরের রাস্তায়
দাঁড়িয়ে ছিল। এমন সময় একটি গাড়ি দ্রুতবেগে তার গায়ের ওপর উঠে গেল।
গাড়িচাপায় সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো ক্যানেলো।
ক্যানেলো ছিল
ক্যাডিজ শহরের সবার অত্যন্ত প্রিয়। সে কারো নিজস্ব কুকুর ছিল না, সে ছিল
সমস্ত শহরবাসীর কুকুর। তাই তো ক্যাডিজের লোকজন তার নামে একটি রাস্তার
নামকরণ করে, তার একটি ছোট প্রতিকৃতিও তৈরি করে শহরে।
ক্যানেলোর একটি প্রতিকৃতি; Souce: Bowerland Cottage Holidays
৬. হাচিকো
যে
কুকুরটির কথা বলে শেষ করবো, তার কথা না বললে আসলে গোটা লেখাটি অসম্পূর্ণ
থেকে যাবে। বিশ্বস্ত কুকুরের প্রসঙ্গে হাচিকোর নাম কি বাদ যেতে পারে?
যাকে
কেন্দ্র করে গল্পের সূচনা, সেই ইজাবুরো উনো জাপানের শিবুয়া এলাকায় থাকতেন।
বলছিলাম ১৯২০ সালের কথা, ইজাবুরো ছিলেন টোকিও ইউনিভার্সিটির কৃষি বিভাগের
একজন নামকরা প্রফেসর। তার আদরের কুকুরটি তার নিত্যসঙ্গী, আকিতাইনু প্রজাতির
এই পশমী বলের নাম ছিল হাচিকো। আদর করে তাকে হাচি বলেও ডাকতেন তিনি।
ইজাবুরোর
প্রতিদিনের রুটিন মোটামুটি একইরকম। সকালবেলা হাচিকোকে সাথে নিয়ে শিবুয়া
স্টেশনে আসতেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার জন্য ট্রেনে উঠতেন হাচিকে বিদায় দিয়ে।
লেকচার শেষ করে বিকাল ৩টার সময় তিনি আবার ফিরে আসতেন শিবুয়া স্টেশনে,
যেখানে হাচি তার জন্য অপেক্ষা করতো। এরপর দুজনে মিলে হেঁটে সেখান থেকে বাড়ি
ফিরতেন। হাচির ছোট্ট পৃথিবীতে এই সময়গুলোই ছিল সবচেয়ে
ইজাবুরোর কুকুর হাচিকো; হাচিকো
বাকি জীবনটা এভাবেই হয়তো কাটিয়ে দিতে পারত, কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠল না।
১৯২৫ সালের দিকে ইজাবুরো যখন ক্লাসে লেকচার দিচ্ছিলেন, সেই অবস্থাতেই তার
হঠাৎ করে স্ট্রোক হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালে নেবার পর সেখানে তিনি মৃত্যুবরণ
করেন। এদিকে বিকাল ৩টায় হাচিকো উৎসাহ নিয়ে অপেক্ষা করে রইলো মনিবের জন্য,
কিন্তু কেউ এলো না।
বিশ্বস্ত হাচিকো পরেরদিন ঠিক ৩টা বাজে শিবুয়া
স্টেশনে গিয়ে একই জায়গায় বসে রইল। ভাবখানা এমন, ইজাবুরো এখনই ট্রেন থেকে
নেমে তাকে কোলে তুলে নেবে আর সে লেজ নেড়ে তাকে সম্ভাষণ জানাবে। কিন্তু
প্রিয় মনিব আজও এলো না। হাচি হাল ছেড়ে দিল না। পরেরদিন হাচিকে আবারও একই
জায়গায় একই সময়ে বহাল তবিয়তে দেখা গেল। এভাবে দিনের পর দিন ধরে সে স্টেশনে
এসে বসে থাকতে লাগল। খুব অল্পদিনের মধ্যেই হাচিকোকে আশেপাশের সবাই চিনে
ফেলল।
প্রফেসর ইজাবুরোর ছাত্রদের কানে এই ঘটনাটি গেলো। একদিন তার
একজন ছাত্র ট্রেনে চেপে শিবুয়া স্টেশনে হাচিকোকে দেখতে এলো। সেখানে ছোট্ট
হাচিকোকে দেখে সে অবাক হয়ে গেল। ফিরে গিয়ে সে দৈনিক একটি পত্রিকায় হাচিকোর
এই প্রভুভক্ততা নিয়ে কলাম ছেপে দিল, এতে সমগ্র পৃথিবী হাচিকোর কথা জেনে
গেল। বিশ্বস্ততা আর বন্ধুবাৎসল্যের প্রতীক হিসেবে সবাই হাচির উদাহরণ দিতে
লাগলো। বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন হাচিকোকে একনজর দেখার জন্য জাপানে আসতে
লাগলো।
টানা ১০ বছর ধরে ঝড়-বৃষ্টি, ঠান্ডা কোনো কিছুই হাচিকোকে রুখতে
পারেনি, প্রতিদিনই সে স্টেশনে হাজির হতে লাগলো। এমনকি বার্ধক্য আর
আর্থ্রাইটিসকেও সে পাত্তা দেয়নি। তার মনে কেবল একটাই আশা, কোনো একদিন
নিশ্চয়ই সে মনিবকে দেখতে পাবে, অন্তত একবারের জন্য হলেও। মাঝে মাঝে দলবেঁধে
এলাকার লোকজন তার সঙ্গে করে আসতো, কখনও সে একাই আসতো।
অবশেষে ১৯৩৫ সালের এক শীতল সন্ধ্যায়
হাচিকো মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে, প্রাকৃতিকভাবেই। তার মৃতদেহ শহরের লোকজন
রাস্তায় আবিষ্কার করলো। সবাই গভীর আলিঙ্গনে তাকে বুকে তুলে নিল, তার
শেষকৃত্য সম্পন্ন করলো ইজাবুরোর কবরের পাশেই। ১০ বছর পর প্রিয় মনিবের সঙ্গ
পেয়ে হাচিকোর কেমন লাগছিল, তা জানার উপায় আর কারোই রইল না।
হাচিকোর আদলে তৈরি মূর্তি; Source: RueBaRueহাচিকো
সমস্ত বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছিল, তার মৃত্যুতে কেঁদেছিল হাজারো
মানুষ। তার স্মরণে শহরবাসী একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি তৈরি করে ঠিক সেই
জায়গাটায়, যেখানে সে মনিবের জন্যে প্রতিদিন অপেক্ষা করতো। এছাড়া তাকে নিয়ে
তৈরি করা হয়েছে একটি সিনেমাও, নাম ‘হাচিকো: এ ডগ’স টেল’, যা অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
Partho অহনা একটু কথা কহো না.. অহনা পেছন ফিরে চাহো না.. প্রথম দেখাতে আমি প্রেমে পরেছি তোমার.. দুচোখে আন্ধার দেখি ঘুম আসে না আমার.. রাত্রে বেলা শুয়ে শুয়ে শুধু ভাবি.. তোমায় কিভাবে পাব আমি.. তোমার চোখেতে হারিয়ে যায় আমার এই মন.. ঘনো কালো চুল দেখে পাগল যে আমি এখন.. হৃদয়ের কথা আমি বলি কারে.. আসো না কাছে আমি শুধু ভালবাসি যারে.. অহনা একটু কথা কহো না.. অহনা পেছন ফিরে চাহো না.. অহনা একটু তুমি হাসো না.. অহনা কেনো ভালবাসো না.. সামনে দিয়ে যখন তুমি হেঁটে যাও.. হৃদয়ের মাঝে আমার ঝড়-যে উঠাও.. প্রেমে পড়ে আমার কিযে হলো.. পাগল হলাম আমি আগে ছিলাম ভালো.. স্যারের কথা কিছুই আমার মাথায় ঢোকে না.. একদিন তোমায় না দেখে থাকতে পারি না.. নীল জোছনায় শোনাবো গান তোমায়.. শুধু তুমি ভালবাসো যে আমায়.. অনেক দিন হলো তুমি কলেজে আসো না.. মনের মাঝে তাই সুর বাজে না.. কোথায় হারালে আমার মনের রানী.. আমি হবো যে তোমার জীবনেরক্ষনি.. অহনা ক্যান্টিনে আসো না.. অহনা একটু কাছে বসো না.. অহনা কেনো ভালবাসো না.. অহনা কিছুভালো লাগে না.. অহনা একটু কথা কহো না.. অহনা পেছন ফিরে চাহো না.. অহনা ...
প্রায় মিনিট পাঁচেক হবে,আমি পড়াতে এসে বসে রইলাম।এখনও ইশিতা মানে আমার ছাত্রী আসার নামই দেখতেছি না।পড়বে না নাকি,,,,?ধ্যাত, ভালোই লাগে না আর টিউশনি করাতে।মনে মনে এসব ভাবতেছি,,,,, :-কেমন আছেন,স্যার? আমার ভাবনার ছেদ ঘটিয়ে বলল,ইশিতা। :-এইতো আছি একরকম।তোমার খবর কি?(আমি) :-ভালো।(বসতে বসতে বললো,ইশিতা) :-আজ এতো সাজগোজ করে আসার কারণ কি?কোথায়ও যাবে নাকি?(আমি) :-না,স্যার।আপনা র জন্য সাজলাম,আর কি,,,,(মিনমিনিয় ে কথাটা বললো,যা আমার কানে পৌছালো) :-মানে,,,? :-না,স্যার।কিছু না। :-নাও বই নাও।আর এতদেরী করে আসো কেন?তোমার পরিক্ষার তো চারদিন বাকি,তাইনা? :-হুমম,আসলে স্যার সাজতে সাজতে একটু দেরী হয়ে গেলো।আচ্ছা,স্যা র,শাড়ীতে এবং সাজগোজে আমায় কেমন লাগছে,,,,?(ইশিত া) :-হুমম,ভালো।(আম ি) :-শুধু ভালো,,,?(মন খারাপ করে) :-না না,খুব ভালো।এবার তো বই নাও,,,,, :-স্যার,আজকে না আমার পড়তে মন চাইতেছে না,,, :-তাহলে আমি আজ আসি,,,,,, এই বলে আমি উঠতে যাবো,,,,, :-স্যার উঠছেন কেন?আমি তো বলি নাই পড়বো না,শুধু বললাম মন চাইতেছে না,,,,, :-ও,,,তাহলে আর কোন কথা না বলে পড়তে বসো,,, :-আচ্ছা,,,তার আগে আমা কয়েকটা কথার জবাব দ...
সকাল থেকেই অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছিল।যাকে বলে বিরামহীন বৃষ্টি,থামছেই না,যেনো আজ আকাশের সব রাগ, দুঃখ, কষ্ট বৃষ্টি হয়ে নামছে,দেখতে দেখতে দুপুর হয়ে গেছে, আকাশে রংধনুটার আবির্ভাব ঘটেছে এইমাত্র। কেউ যেন খুব নিখুঁতভাবে গোটা আকাশটাকে লেপে দিয়েছে সাত রঙের সাতটা তুলি দিয়ে। বৃষ্টির ঝাপটা থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া পাখিগুলো আবারো ভিড় জমাচ্ছে মুক্ত আকাশে। কত্ত স্বাধীন ওরা! ইস! আমার যদি ওদের মত ডানা থাকতো! হারিয়ে যেতাম আমার এই চেনা জগতটা ছেড়ে অনেক দূরে. . .অনেক দূরে, অজানা পথে পাড়ি দিতাম। নিজেকেই নিজে প্রশ্ন করছি আজ এমন কেন মনে হচ্ছে আমার? যে আমি ঘরে থেকে একদমই বেরুতে চাইতাম না, আমার পৃথিবী বলতে ছিলো চারকোনার ঘর, আর ছোট্ট একটা বারান্দা,আর বাসার ছাদ টা, বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতাম এই জায়গা গুলোতে, এইটুকু জুড়েই আমার পৃথিবী ছিলো। অথচ আজ আমার হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে আজ নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে,বারান্দাটা অসহ্য লাগছে, বাসার উপরের ছাদটাকে পাহাড়ের মতো মনে হচ্ছে। চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করছে। খুব কষ্ট হচ্ছে খুবউউউউ, কিন্তু কেনো? উওর নেই আমার কাছে!! বুক...
আজ অনেক দিন পর ময়মনসিংহ পার্কে হাঁটতে বের হয়েছি । হাঁটতে ভালই লাগছে। সেই সাথে এক ধরনের শূন্যতাও গ্রাস করছে। কাউকে হারানোর শূন্যতা। ময়মনসিংহ পার্কের এই পরিচিত রাস্তাগুলোতে অনেকবার রিনীর হাত ধরে হেঁটেছি । আজ আর রিনী নেই । তাই একাই হাঁটতে হচ্ছে । রিনীকে আমার জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেছি,প্রায় ছয় মাস হয়ে গেল । পার্কের রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে কালামের ছোট চায়ের দোকানটা চোখে পড়লো । অনেকদিন এই দোকানটাতে চা খাওয়া হয় না । ১২-১৩ বছরের কালাম নামের এই ছেলেটা অসাধারণ চা বানায় । রিনী আর আমি এই দোকানটাতে অনেকবার চা খেয়েছি । রিনী যে স্যার এর কাছে Physics প্রাইভেট পড়তো সেই স্যার এর বাসা ছিল পার্কের কাছেই । বিকালবেলা ওর প্রাইভেট শেষ হলে মাঝে মাঝেই আমাকে ফোন দিয়া পার্কে আসতে বলতো । বিকালবেলা ওর সাথে পার্কে হাঁটতে এসে প্রায়ই কালামের দোকানে চা খাওয়া হতো । দোকানের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় কালাম ডাকল, `রনি ভাই,কই যান?’ এইতো, হাঁটতেছি ।‘ চা খায়া যান । অনেকদিন ধরে তো আসেন না । আফা আহে নাই ?’ কালামের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে দোকানে গিয়ে বসলাম । দোকানে গিয়ে বসতেই কালাম এক কাপ চা...
কেন এই নিঃসঙ্গতা Singer:Partho Borua . কেন এই নিঃসঙ্গতা কেন এই মৌনতা কেন এই নিঃসঙ্গতা কেন এই মৌনতা আমাকে ঘিরে কেও না জানুক কার কারণে কেও না জানুক কার স্মরণে মন পিছু টানে তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে নিয়মে . স্বপ্ন গুলো অন্য কারো ভুল গুলো আমারি কান্না গুলো থাক দুচোখে কষ্ট আমারি ভেবে নিব প্রেম আনে আর আধারি কেও না জানুক কোন বিরহে দিন চলে যায় আজ কিভাবে মন পিছু টানে তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে তবুও জীবন যাচ্ছে কেটেজীবনের নিয়মে নিয়মে .ইচ্ছে গুলো থাক হৃদয়ে ব্যর্থতা আমারি সুখ না হোক অন্য কারো দুঃখরা আমারি ভুলে যাবো মন যেন আজ ফেরারি কেও না জানুক কোন হতাশায় দিন চলে যায় নীরবে হায় মন পিছু টানে তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে নিয়মে কেন এই নিঃসঙ্গতা কেন এই মৌনতা কেন এই নিঃসঙ্গতা কেন এই মৌনতা আমাকে ঘিরে কেও না জানুক কার কারণে কেও না জানুক কার স্মরণে মন পিছু টানে তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে নিয়মে কেন এই নিঃসঙ্গতা কেন এই মৌনতা কেন এই নিঃসঙ্...